Thursday, December 1, 2016

ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে ৭ খাবার

কোলেস্টেরল একধরনের চর্বি। সাধারণত দুই ধরনের কোলেস্টেরল আছে। একটি লো ডেনসিটি লাইপো প্রোটিন (এলডিএল) বা বাজে কোলেস্টেরল এবং অপরটি হাইডেনসিটি লাইপো প্রোটিন (এইচডিএল) বা ভালো কোলেস্টেরল।শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমাতে কাজ করবে এমন কিছু খাবারের নাম জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের স্বাস্থ্য বিভাগ।

১. ওটমিল

ওটমিলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আঁশ। এটি বাজে কোলেস্টেরল তৈরি প্রতিরোধ করে।

২. রসুন

রসুনের মধ্যে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহরোধী উপাদান। কোলেস্টেরল কমাতে রসুন বেশ উপকারী একটি খাদ্য।

৩. বাদাম

বাদামের মধ্যে রয়েছে ভালো পরিমাণের চর্বি। একমুঠো বাদাম, বিশেষ করে ওয়ালনাট বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়।

৪. সবজি

সবজির মধ্যে আছে আঁশ। পালং শাক, ব্রকলি, বাজে কোলেস্টেরল তৈরিতে বাধা দেয়।

৫. ফল

কমলা, আঙ্গুর কোলেস্টেরল কমাতে কাজ করে। প্রতিদিন একটি আপেলও কিন্তু কোলেস্টেরল কমাতে কাজে দেয়।

৬. দারুচিনি

দারুচিনি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখুন। বিশেষত শীতের সময়। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের সঙ্গে লড়াই করে।

৭. পেঁয়াজ

পেয়াঁজের মধ্যে রয়েছে কিউরেকটিন। এটি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। প্রতিদিন একটি কাঁচা পেঁয়াজ সালাদের সঙ্গে রাখতে পারেন।




তথ্যসুত্রঃ দেশ টিভি বিডি ডট কম

Monday, October 10, 2016

কোলেস্টেরল দুই ধরনের একটি ভালো কোলেস্টেরল, অন্যটি বাজে

কোলেস্টেরল দুই ধরনের। একটি ভালো কোলেস্টেরল, অন্যটি বাজে কোলেস্টেরল। ধূমপান, মদ্যপান, ভুল খাদ্যাভ্যাস, অলস ভাব ইত্যাদি বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। শরীরের বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি বাসা বাঁধে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হৃদরোগ। তাই শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়ানো প্রয়োজন।  
জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রকাশ করা হয়েছে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।
১. শরীরের বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম কোলেস্টেরলকে কমাতে কাজ করে। ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।
২. বাড়তি ওজন কোলেস্টেরলের পরিমাণকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই অবশ্যই ওজন কমাতে হবে।
৩. ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে গিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়বে।
৪. এ ছাড়া শরীরের বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে খেতে হবে প্রচুর ফল ও শাকসবজি। আরো খেতে হবে বাদাম ও মাছ। এড়িয়ে যেতে হবে লাল মাংস (গরু ও খাসি)।

প্রতিবছর দুই লাখ ১৬ হাজার নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন

সারা বিশ্বে ২০০৪ সালে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ লাখ ১৯ হাজার নারী মৃত্যুবরণ করেন। এটি মোট মৃতের শতকরা ১ ভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে প্রতিবছর দুই লাখ ১৬ হাজার নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তার মধ্যে ৪০ হাজার নারী মারা যান। বাংলাদেশেও ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা কম নয়। আমাদের দেশে প্রায় ২২ হাজার নারী এ ক্যানসারে প্রতিবছর প্রাণ হারান। অসচেতনতাই এর মূল কারণ। একটু সচেতন হলেই আমরা রক্ষা করতে পারি আমাদের প্রিয় মুখগুলো। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছরের মতো দেশে আজ পালিত হচ্ছে স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস।
স্তন ক্যানসার নারীর জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হলেও এটি কিন্তু অনেক ক্যানসারের তুলনায় ভালো। যেমন : অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের কথাই ধরা যাক, এটা এমনই মারাত্মক ক্যানসার যে বোঝার কোনো উপায়ই থাকে না। একেবারে শেষের দিকে এটি ধরা পড়ে। আর যখন ধরা পড়ে, তখন করার কিছুই থাকে না। অথচ একটু সচেতন হলেই এ ক্যানসার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আবার এ ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও যদি ক্যানসারের শুরুতে রোগনির্ণয় করে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়, তাহলে কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ মানুষের মতো জীবনযাপন করা সম্ভব। সঠিক সময়ে ও সঠিকভাবে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা করানো সম্ভব হলে রোগমুক্ত হয়ে ১০ বছর বেঁচে থাকার হার প্রায় ৯৮ ভাগ। এ ক্যানসার নির্ণয় করার জন্য বেশ কিছু ভালো পদ্ধতি আছে। একটি জিনিস মনে রাখতে হবে, স্তন ক্যানসার শুরুতে নির্ণয় করে চিকিৎসা করাতে পারলে যেমন প্রাণে বাঁচা সম্ভব হয়, কিন্তু যদি এ ক্যানসার বেশি দিন ধরে নির্ণয় করা না হয় বা চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে রোগীর মৃত্যু অবধারিত।
স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে আপনি একজন চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করতে পারেন। এ জন্য মাসে আপনাকে কয়েক মিনিট সময় ব্যয় করতে হবে। নিজে নিজে আপনার স্তন পরীক্ষা করুন। ঋতুস্রাব শুরু ৭-১০ দিন পর বা মাসিক শেষ হওয়ার তিন দিন পর স্তন পরীক্ষা করা সবচেয়ে ভালো সময়। এ সময় স্তনের তরল কমে যায় ও কোষের বৃদ্ধি কমে যাওয়ায় স্তনে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তা ভালোভাবে বোঝা যায়। শরীরের ওপরের অংশ থেকে কাপড় খুলে দুই হাত পাশে রেখে আয়নার সামনে বসুন। এবার ভালোভাবে লক্ষ করুন, স্তনে কোনো অস্বাভাবিকতা, যেমন—দুটো স্তনের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য আছে কি না, স্তনের আকার-আকৃতি ও রঙের পরিবর্তন, দুটো নিপল বা স্তন বোঁটা একই লাইনে আছে কি না, নিপল ভেতরে ঢুকে গেছে কি না, স্তনের ত্বকে কোনো পরিবর্তন দেখা যায় কি না, নিপল থেকে রক্তিম বা পানির মতো কিছু বের হয় কি না। এবার হাত আস্তে আস্তে মাথার ওপরে তুলুন। দেখুন স্তনের ত্বক কমলালেবুর খোসার মতো মনে হচ্ছে কি না। কোনো চাকা দেখা যায় কি না। এবার পুরো স্তনকে চার ভাগ করে প্রত্যেক ভাগ হাতের আঙুল দিয়ে ভালো করে পরীক্ষা করুন। হাতে চাকার মতো কিছু লাগে কি না, তা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি স্তনে কোনো চাকা বা ওপরের সমস্যাগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। এভাবে প্রতি মাসে একবার স্তন নিজে নিজে পরীক্ষা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু এ পরীক্ষার মাধ্যমেই স্তন ক্যানসার শুরুতে নির্ণয় করার মাধ্যমে অনেকের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। গবেষকরা বলেছেন, ২০ বছরের সব নারীকে মাসে অন্তত একবার নিজের স্তন নিজেই পরীক্ষা করতে হবে। ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে বছরে অন্তত একবার চিকিৎসকের মাধ্যমে স্তন পরীক্ষা করাতে হবে। আর ৪০ বছরের কম বয়সীরা তিন বছরে একবার চিকিৎসকের মাধ্যমে স্তন পরীক্ষা করাতে হবে। এ ছাড়া ম্যামোগ্রামের মাধ্যমে নির্ণয় করা যেতে পারে স্তনের ক্যানসার। ম্যামোগ্রাম হলো স্তনের এক্স-রে। হাতের সাহায্যে স্তনের খুব ছোট চাকা নির্ণয় করা না গেলেও এর মাধ্যমে তা নির্ণয় করা যায়। শতকরা ৮৫-৯০ ভাগ স্তন ক্যানসার এ পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। ম্যামোগ্রাফির মাধ্যমে স্তন ক্যানসার শুরুতে নির্ণয় করায় নারীদের স্তন ক্যানসারে মৃত্যুর হার কমেছে ২০-৩০ ভাগ। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির মতে, প্রত্যেক নারীকে ৪০ বছর বয়সে একবার ম্যামোগ্রাম করা প্রয়োজন। এর পর থেকে প্রতিবছর একবার করে এ পরীক্ষা করার ব্যাপারে তারা সুপারিশ করেছে। যদি কারো ক্যানসারের লক্ষণ বা ঝুঁকি থাকে, যেমন—কারো মা, বোনের ক্যানসার ধরা পড়ে, তাঁদের ৩৫ বছর বয়সে প্রথমবার ম্যামোগ্রাফি করাতে হবে। এর পর থেকে বছরে একবার করে এ পরীক্ষা করতে হবে। তরুণীদের স্তনে ঘন স্তন টিস্যু থাকার কারণে ম্যামোগ্রাফির মাধ্যমে ক্যানসার নির্ণয় করা যায় না। এ ক্ষেত্রে ক্যানসার ঘন স্তনের মধ্যে ঢাকা পড়ে। তরুণীদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই, তাঁদের ক্যানসার যদি হয়েও থাকে তা শুরুতে নির্ণয় করা যায় স্তন আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে। এ ছাড়া আছে এমআরআই। এটি সবচেয়ে আধুনিক পরীক্ষা। অনেকে মনে করেন, ম্যামোগ্রাম এক্স-রে পরীক্ষা বলে তা বারবার করালে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন যে, ম্যামোগ্রাম করালে কোনো প্রকার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে না। তাই এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই।
সংকোচ করবেন না : অনেকেই স্তনে কোনো রোগ হলেও সংকোচে চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে রোগ জটিল আকার ধারণ করতে শুরু করে। এমনও দেখা যায় যে, শুধু সংকোচের কারণেই ক্যানসার জটিল আকার ধারণ করে মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সংকোচ করবেন না। স্তনে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : মেডিকেল অফিসার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।